ঋদ্ধি ভট্টাচার্য, কোলকাতা:- মানবজাতির ইতিহাসে ফ্যাশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আজকের বিশ্বে, সময়ের সাথে সাথে আমরা পোশাক, দৃষ্টিভঙ্গি এবং অন্যান্য পরিবর্তন দেখতে পাই। ভারত থেকে শুরু করে বিশ্বজুড়ে উপস্থাপনা এবং আত্মবিশ্বাস এই ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সম্প্রতি সমাপ্ত পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে বড় শোগুলির মধ্যে একটি, যার নাম এফ.এস.এস ফ্যাশন শো, যা মধুরিমা ফ্যাসিনেশন অ্যান্ড একাডেমি সাথে যৌথ উদ্যোগে মালদা অঞ্চলে এই আয়োজনের জন্য সুপরিচিত, সেখানে অসাধারণ সংগ্রাম এবং পরিশ্রমী মডেল মিস লাবণী দাসকে দেখা গেছে, যিনি মিস বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন।চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে তিনি তাঁর যাত্রাপথের কথা বলেছিলেন। তিনি দক্ষিণ দিনাজপুরের দৌলতপুর গ্রাম থেকে এসেছিলেন এবং মডেলিংয়ের পাশাপাশি তাঁর শখ নৃত্য ও চিত্রাঙ্কনও। বর্তমানে তিনি বুনিয়াদপুর কলেজে বাংলা অনার্সে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন। সে তার মডেলিং ক্যারিয়ার শুরু করেছিল অষ্টম শ্রেণী থেকে। এরপর সে উত্তরবঙ্গ অঞ্চলের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেল এবং কিছু সময়ের পর সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করে। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।তিনি আরও অনেক পুরস্কার জিতেছেন যার মধ্যে অন্যতম হল কালিয়াগঞ্জে তার চ্যাম্পিয়ন হওয়া, যা প্রিয়দর্শিনী সিজন ১ নামে পরিচিত। এছাড়াও তিনি বালুরঘাট ইন্ডিয়ান আইকনিক মডেল শো-তে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ছিলেন। অন্যান্য শো যেখানে তিনি কিছু খ্যাতি অর্জন করেছেন, তারা হল ফ্যাশন গ্ল্যাম আইকন এবং বেঙ্গল নেক্সট টপ মডেল যা বালুরঘাটে অনুষ্ঠিত হয় এবং ফ্যাশন গ্ল্যাম আইকন সিজন ২। এই সব শোতে তিনি প্রতিযোগীদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করতে সক্ষম হয়েছেন। সে এত ছোট বয়েস থেকে এই পেশাকে কেন নিজের করে তুলেছেন সেই ব্যাপারে বলেন মডেলিং পেশা নিয়েছেন কারণ এটা তার আত্মপ্রকাশের ও নিজের পরিচয় সৃষ্টি একটি মাধ্যম।তিনি ফ্যাশন, ক্যামেরার সামনে কাজ করা এবং ভিন্ন ভিন্ন চরিত্র ও লুক উপস্থাপন করতে ভালোবাসেন। মডেলিং তাকে আত্মবিশ্বাসী হতে সাহায্য করেছে এবং নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করার সুযোগ করে দিয়েছে। তার পরিবারে তিনি ও তার মা এবং বড় বোনের সঙ্গে থাকেন যারা তার যাত্রাপথে একমাত্র সমর্থক। এর পাশাপাশি অনেকেই এই ক্ষেত্র সম্পর্কে বিভিন্ন কথা বলেছে, কিন্তু সে শুধু তার কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও মনোযোগ ধরে রেখেছে এবং এটি তার সাফল্যের মূল লক্ষ্য। তিনি তার একটি বিশেষ বন্ধুকে তার কৃতজ্ঞতা জানাতে চান, যার নাম তিনি এই মুহূর্তে প্রকাশ করতে চান না। তার সেই বন্ধু তার পরিবারে সাম্প্রতিক চলমান সমস্যার সময় অনেক কিছু করেছেন এবং তাকে বড় স্বপ্ন দেখতে এবং তা বাস্তবায়ন করার জন্য উৎসাহিত করেছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, তিনি এটি তার বাবার প্রতি উৎসর্গ করতে চান যিনি মারা গেছেন এবং ফ্যাশন ও ডিজাইনিং ক্ষেত্রে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করতে চান বিশ্ব পর্যায়ে। এই প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন ঘোষিত হবার পর তার কেমন লাগলো সে বিষয়ে তিনি বলেন প্রথমে সেরা ১০-এ নিজের নাম শুনে ভীষণ খুশি হয়েছিলো, আত্মবিশ্বাস বেড়েছিল। এরপর রানার আপ ও চ্যাম্পিয়নদের মাঝে নাম শুনে আনন্দ আরও বেড়ে যায়। চূড়ান্ত ফলাফলে নিজের নাম শুনে আবেগে সাথে মিশে যায় এবং কিছুক্ষণের জন্য মনে হয় পায়ের তলায় কিছুই নেই, সে অনুভূতি তার পক্ষে বলে বোঝানোর নয়। তিনি এও বলেন যে সে তার নতুন গ্রুমারের সাথে কাজ করে তার লুক এবং আত্মবিশ্বাসে একটি আলাদা ধারালোতা এসেছে। এর আগের শো-তেও ভালো করেছিল কিন্তু এখানে গ্রুমিংটা থিমের সঙ্গে ভাল ভাবে মিলে গেছিল তাই আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে গিয়েছিল। এছাড়াও গ্রুমারদের ব্যবহার ও শেখানোর ধরণটা বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল যা তাকে আরও সাহায্য করেছে। নতুন মডেলদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন এই প্রফেশন-এ আসার জন্য অনেক বাধা আছে, শুধু এই প্রফেশনেই নয়, সব প্রফেশনে। কিন্তু এই প্রফেশন-এ বিশেষ করে মহিলাদের নানা ধরনের কথা শুনতে হয়। তারা যেন সবটা সাজিয়ে নেয় এবং নিজের নিষ্ঠা , কর্তব্য এবং একাগ্রতা নিয়ে এগিয়ে যাক এবং তারা তাদের স্বপ্ন অবশ্যই পূরণ করতে পারবে একদিন না একদিন। এরপর দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেন তাকে পরেরবার থেকে মূলত জেলার বাইরে শো গুলিতে দেখা যেতে পারে এবং তিনি কলকাতায় এসে অংশগ্রহণ করতে পারেন।