অভিজিৎ হাজরা , উলুবেড়িয়া, হাওড়া :- স্কুলে স্কুলে এখন পুজোর ছুটির আমেজ। দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজো, কালীপুজো ও ভাইফোঁটা— একের পর এক উৎসবে মেতে উঠেছে ছাত্রছাত্রীরা। তবে উৎসব শেষে স্কুল খুললেই শুরু হবে পরীক্ষার প্রস্তুতি। সাধারণত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই পরীক্ষা শুরু হয়, তাই এখন থেকেই পড়াশোনার অভ্যাসে ফেরানো জরুরি।
কিন্তু পাস–ফেল প্রথা না থাকায় অনেক অভিভাবকই সন্তানদের পড়াশোনায় কিছুটা নিশ্চিন্ত। ফলে এই দীর্ঘ ছুটিতে পড়াশোনায় ঢিলেমি দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়াতে এবং অভিভাবকদের সচেতন করতে উদ্যোগ নেন উলুবেড়িয়া দক্ষিণ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সুরাজ মন্ডল।
তিনি হাটগাছা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বাড়মংরাজপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজদূত সামন্তের উদ্যোগে শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা যথাসময়ে উপস্থিত হন।
বিদ্যালয় পরিদর্শক সুরাজ মন্ডল শিক্ষার্থীদের ছুটিকালীন পড়াশোনা, হাতের কাজ ও সৃজনশীল কার্যকলাপ সম্পর্কে খোঁজ নেন। পাশাপাশি তিনি বিদ্যালয়ের ভেষজ উদ্যান, ফলের বাগান ও বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় দেড়শটি গাছের ছুটিকালীন পরিচর্যা সম্পর্কেও শিক্ষকদের কাছ থেকে জানতে চান এবং শিক্ষার্থীদের কাছেও গাছগুলির গুণাগুণ ও পরিচয় সম্পর্কে তাদের জ্ঞান যাচাই করেন।
তিনি বলেন- “ছুটি মানে শুধু বিশ্রাম নয়, শেখারও সময়। বইয়ের পড়ার পাশাপাশি প্রকৃতিকে চেনা, গাছপালার যত্ন নেওয়াও শেখারই অঙ্গ। উৎসবের আনন্দের মাঝেও যদি প্রতিদিন অল্প সময় পড়া ও হাতে-কলমে শেখায় ব্যয় করা যায়, তাহলে পরীক্ষার আগে কোনো চাপ থাকবে না।”
শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “ছুটির পর দ্রুত সিলেবাস সম্পূর্ণ করে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করা আমাদের মূল লক্ষ্য। সবাই একসঙ্গে এগিয়ে এলে ভালো ফলাফল আসবেই।”
অভিভাবকদেরও তিনি পরামর্শ দেন যেন তাঁরা সন্তানদের পড়াশোনার পাশাপাশি হাতের কাজ, পরিবেশচর্চা ও গাছের যত্নে আগ্রহী করে তোলেন।
অভিভাবকদের মধ্যে মীনাক্ষী বেগম বলেন,
“ছুটির সময় বাচ্চাদের পড়াতে একটু আলসেমি হয়, কিন্তু আজ পরিদর্শকবাবুর কথা শুনে বুঝলাম, এখন থেকেই নিয়ম করে পড়া ও শেখার অভ্যাস গড়ে তোলা দরকার। এই ধরনের পরিদর্শন সত্যিই খুব উপকারী।”
বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানান, এই পরিদর্শন তাঁদের নতুনভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। ছুটি শেষে দ্রুত সিলেবাস শেষ করার পাশাপাশি ভেষজ উদ্যান ও বিদ্যালয়ের পরিবেশের যত্নেও তাঁরা আরও মনোযোগী হবেন।