মহম্মদ শাহজাহান আনসারী,খাতড়া : খাতড়া ব্লকের বারবারের পরাজয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তারাশঙ্কর রায়। পঞ্চায়েত থেকে লোকসভা প্রতিটি ভোটেই খারাপ ফল করায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খাতড়া ব্লক তৃণমূলের বিজয়া সম্মেলনের মঞ্চে তিনি খোলাখুলি আত্মসমালোচনার ডাক দেন।তারাশঙ্কর রায় বলেন, “বারবার বিভিন্ন ভোটে আমরা হেরেছি। এটা খাতড়ার মানুষের দোষ নয়, আমাদের দোষ। খাতড়ার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করে, কিন্তু আমাদের আচরণ, রীতি-রেওয়াজ মানুষের ভালো লাগেনি বলেই আমরা হেরে যাচ্ছি।” তিনি স্পষ্ট বার্তা দেন- জনগণের কাছে না গিয়ে ভোটে জেতা সম্ভব নয়। “মানুষ আপনাদের কাছে আসবে না, আমাদেরই মানুষের দরজায় দরজায় যেতে হবে। ভুল করলে স্বীকার করতে হবে, ঔদ্ধত্য চলবে না। এমপি-এমএলএ, ব্লক সভাপতি এসব কিছু নয়, জনগণ না থাকলে আমাদের কোনো মূল্য নেই,” বলেন জেলা সভাপতি। তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকেই পরাজয়ের অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করেন তিনি। তারাশঙ্করের কথায়, “খাতড়া ব্লকে শত্রু কেউ নেই, শত্রু আমাদের নিজেদের মধ্যে। কারও পেছনে লাগা চলবে না। সংগঠনের সিঁড়ি শক্তিশালী না হলে জেতা সম্ভব নয়।” একই সঙ্গে তিনি বলেন, “নেতাদের লড়াই কেউ পছন্দ করেনা। সাধারণ কর্মীরা এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে। তাই এটা চলতে পারেনা” তিনি খাতড়ার মানুষকে দোষ না দিয়ে জেলা সভাপতির আসন থেকেই নিজে জনগণের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চান। পাশাপাশি খাতড়ার বর্ষিয়ান নেতাদের একজোট হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। “সবাই যদি একসাথে মানুষের পাশে দাঁড়ান, খাতড়া ব্লক অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াবে,” মন্তব্য তারাশঙ্কর রায়ের। বিজয়া সম্মেলনের মঞ্চে এদিন উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের খাদ্য প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি, বর্ষীয়ান নেতা জয়ন্ত মিত্র, মানিক মিত্র, বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সদস্য রাজকুমার সিংহ, প্রাক্তন ব্লক সভাপতি সুব্রত মহাপাত্র, বর্তমান ব্লক সভাপতি তরুণ পাত্র প্রমুখ।
রানিবাঁধ বিধানসভার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ফল হচ্ছে খাতড়া ব্লকে। তাই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলা সভাপতির এই বক্তব্য স্পষ্ট করে দিল যে ‘নিজেদের ভুল শুধরে সংগঠনকে শক্তিশালী না করলে খাতড়ায় ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব নয়।’