খদিমুল ইসলাম, বানারহাট :- রাতারাতি উজাড় হয়ে গেল স্কুল প্রাঙ্গণের সেগুন বাগান! জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট ব্লকের দুরামারি চন্দ্রকান্ত হাই স্কুলের মাঠে একের পর এক প্রায় ৪৭টি মূল্যবান সেগুন গাছ কেটে নেওয়ায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। অভিযোগ, এই কাণ্ড ঘটিয়েছে দুষ্কৃতীরা, আর তাদের পেছনে সক্রিয় রয়েছে জমি মাফিয়াদের চক্র।রবিবার ভোরে গরু চরাতে গিয়ে গ্রামবাসীরা প্রথম দেখতে পান, রাতারাতি প্রায় কেটে ফেলা হয়েছে গোটা সেগুন বাগান। মুহূর্তে খবর ছড়িয়ে পড়তেই ভিড় জমে যায় স্কুল মাঠে।ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে একটি অডিও টেপ, যেখানে শোনা যাচ্ছে শালবাড়ি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নবীন রায় ও দুই পুলিশ আধিকারিক দীপক বর্মন ও উপেন রায়ের মধ্যে কথোপকথন। সেখানে প্রধানকে বলতে শোনা যায়, গাছ কাটা হচ্ছে, অথচ পুলিশ ঘটনাস্থলেই দাঁড়িয়ে রয়েছে। আরো বলতে শোনা যায় যে তাহলে পুলিশের মদতেই গাছ কাটা হচ্ছে। এমনকি ওই সময় পুলিশদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকিও দিতে শোনা যায় অডিওতে।(তবে এই অডিও টেপের সত্যতা যাচাই করেনি এই সময় পত্রিকা)ঘটনার খবর পেয়ে সকালেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বনদপ্তরের কর্মী ও বানারহাট থানার পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত।চন্দ্রকান্ত হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সজল কান্তি সরকার এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া নেওয়ার জন্য ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি।কি কারনে সব জেনেও মুখে কুলুপ এঠেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক তা নিয়ম প্রশ্ন উঠছে স্থানীয় গ্রামবাসী ফরিজুল হক জানান,“সকালে এসে দেখি সব গাছ কেটে মাঠে ফেলে রাখা হয়েছে। কারা এই কাজ করেছে প্রশাসন যেন খুঁজে বের করে।”শালবাড়ি ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নবীন রায় বলেন,“রাত একটা নাগাদ খবর পাই গাছ কাটা হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাই। মোট ৪৭টি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। প্রশাসনকে আমি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছি।”পঞ্চায়েতের সভাপতি রবি সরকার বলেন,“এই দৃশ্য দেখে আমরা স্তম্ভিত। স্কুলের মাঠে খেলোয়াড়রা গাছের নিচে বসতো। গাছ কেটে ফেলার ঘটনা খুবই কষ্টদায়ক। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।”অভিযোগের জবাবে কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিক দীপক বর্মন বলেন,“রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। যারা গাছ কাটছিল তারা মদ্যপ অবস্থায় ছিল এবং হাতে দা, কুড়াল ছিল। তাই প্রথমে আটকাতে পারিনি। পরে পুলিশ ভ্যান আসার পর আমরা তাঁদের বাধা দিই, তখন তারা সেখান থেকে পালিয়ে যায়।”এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে প্রশাসন। তবে প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে পুলিশের চোখের সামনে এত বড়সড় গাছ কাটার কাজ কীভাবে হলো? কেনই বা পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার করলেন না।