অর্পিতা সিনহা, বাঁকুড়া( ১৫ ই মে): আমরা প্রায় একটা সতর্কবার্তা শুনে থাকি গুজব ছড়াবেন না গুজবে কান দেবেন না। তা সত্ত্বেও আমরা কিছু কিছু মানুষের মধ্যে গুজব বা ফেক নিউজ ছড়ানো বা রটানোর প্রবণতা লক্ষ্য করে থাকি। মানুষের স্বাভাবিক আচরণ হল অন্যের সাথে গল্পগুজব করা। গল্পগুজবের সময় যদি তারা কোন বিখ্যাত ব্যক্তি ,অভিনেতা বা চেনা কাউকে নিয়ে কোনো আকর্ষণীয় খবর শুনতে পায় এবং সেটি যদি সুখের ,দুঃখের , রসালো বা কলঙ্কের হয় তবে তাতে একটু বাড়তি মনোযোগ দেয় এবং ঘটনাটি শোনার পর তারা আর নিজেদের ধরে রাখতে পারে না। বরং তাদের মন আরো বেশী আলোড়িত হয়ে ওঠে অন্য কাউকে ঘটনাটি বলার জন্যে। সেই মূহূর্তে তারা ঘটনাটির সত্যতা বিচার করে না বা চিন্তা করে না যে ঘটনাটি যদি সত্যি না হয় তাহলে ঐ ব্যক্তির মানহানির কারণ হতে পারে বা ঐ ব্যক্তি কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজের জীবনে কোন বড় ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ নানা মুখরোচক রসালো গল্পকে ইচ্ছা করে গুজব বা ফেক নিউজ হিসাবে ছড়িয়ে দেয়।আবার কোন কোন সময় দেখা যায় কিছু মানুষ নিজের সামাজিক মর্যাদা বানানোর জন্য প্রতিপক্ষ সম্পর্কে নেতিবাচক গুজব ছড়িয়ে দেয় কোনো গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের মধ্যে। এর ফলে সমাজের একটি বিশাল অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।আর রাজনীতির ক্ষেত্রে ফেক নিউজ কে তো একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হিসাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফেক নিউজ যেমন হাসির খোরাক হতে পারে অন্যদিকে মারাত্মক বিদ্বেষের প্ররোচনায় সামাজিক স্থিতির অবক্ষয়ও ডেকে আনতে পারে। প্রাচীনকালে গুজব মুখে মুখে ছড়াতো বলে কিছুটা হলেও সময় লাগতো কিন্তু বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে অল্প সময়ের মধ্যেই এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নিমেষের মধ্যে ফেক নিউজ ছড়িয়ে পড়ছে। ফেসবুক, হোয়াটস আ্যাপ, ইউটিউব, টুইটার ইত্যাদি সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্যে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে যাচ্ছে ফেক নিউজ। কখন আবার দেখা যাচ্ছে মিথ্যা ওয়েবসাইট ব্যবহার করে কোনো মিথ্যে তথ্য এমন ভাবে প্রকাশিত হচ্ছে যে তা আমাদের কাছে সম্পূর্ণ সত্যি বলে মনে হচ্ছে। এই ফেক নিউজ থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হলে প্রথমেই আমাদের যে যেসব সোশ্যাল মিডিয়া সাহায্যে এই ফেক নিউজ গুলি প্রকাশিত হচ্ছে সেগুলি চিহ্নিত করা এবং কঠিন আইন প্রণয়ন করা একান্ত প্রয়োজন। আবার সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের উচিত যে কোন ঘটনার সত্যতা যাচাই করে অন্যের সাথে সেই ঘটনা শেয়ার করা ।তাহলেই আমরা সকলেই এই সামাজিক ব্যাধি থেকে মুক্তি পাবো।