হীরক মুখোপাধ্যায় (১১ মে ‘২২):- প্রথাগত শল্য চিকিৎসার পরিবর্তে ৬৩ বছরের এক ব্যক্তির শরীরে যন্ত্রণাহীন ‘স্টিরিওট্যাকটিক অ্যাব্লেটিভ বডি রেডিওথেরাপি’ (এস এ বি আর)-র মাধ্যমে সফলভাবে ‘ইন্ট্রাহেপাটিক কলাঞ্জিওকারসিনোমা’ চিকিৎসা করল কোলকাতার ‘অ্যাপোলো ক্যানসার সেন্টার’।
আজ ‘অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল’-এর কোলকাতা শাখায় এই সংক্রান্ত এক সাংবাদিক সম্মেলনে ‘অ্যাপোলো ক্যানসার সেন্টার’-এর নির্দেশক তথা সার্জিক্যাল ওঙ্কোলজিস্ট ডাঃ সৈকত গুপ্ত-র উপস্থিতিতে সিনিয়র রেডিয়েশন ওঙ্কোলজিস্ট ডাঃ সায়ন পাল জানিয়েছেন, “এই বছরের মার্চ মাসে ‘অ্যাপোলো ক্যানসার সেন্টার’-এ আসেন অশোক রায় (নাম পরিবর্তিত)।
রোগীকে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করার সময় দেখা যায় তাঁর যকৃতে একদিকে যেমন ক্ষত রয়েছে, তেমনই রয়েছে ৩ × ৩.৩ সেন্টিমিটার আকারের টিউমার। পরে বায়োপসি পরীক্ষা করে দেখা যায় তিনি ‘ইন্ট্রাহেপাটিক কলাঞ্জিওকারসিনোমা’ বা পিত্তনালীর ক্যানসার রোগে আক্রান্ত।
প্রথম অবস্থায় রোগীকে এই রোগের ক্ষেত্রে নিয়মানুযায়ী সাধারণ শল্য চিকিৎসার কথাই ভাবা হয়েছিল, পরে রোগীর বয়স শারীরিক ও মানসিক অবস্থা এবং অন্যান্য বিবিধ বিষয় মাথায় রেখে ‘স্টিরিওট্যাকটিক অ্যাব্লেটিভ বডি রেডিওথেরাপি’ বা এস এ বি আর দিয়ে চিকিৎসা করার কথা ভাবা হয়।
‘এস এ বি আর’ হলো যন্ত্রণাহীন একটা চিকিৎসা পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে পূর্ব নির্ধারিত স্থিরীকৃত অঙ্গের কোষগুলোকে মারার জন্য উপাচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।
এই রোগীর ক্ষেত্রে ৫ বার ‘এস এ বি আর’ করা হয়েছিল। রোগী জটিলতা ছাড়াই প্রক্রিয়াটা সহ্য করতে পেরেছিলেন।
মার্চ মাসে চিকিৎসা সম্পূর্ণ হওয়ার পর ৩ মাস বাদে রোগীকে পরীক্ষা করে দেখা গেছে তাঁর শরীরে ক্যানসারের বিকাশ ঘটেনি বরং তিনি সম্পূর্ণ ভাবে রোগমুক্ত হয়েছেন।”
ডাঃ সায়ন পাল-এর কৃতিত্বকে অভিনন্দন জানিয়ে কলকাতার ‘অ্যাপোলো ক্যানসার সেন্টার’-এর নির্দেশক ডাঃ সৈকত গুপ্ত জানিয়েছেন, ” অত্যাধুনিক কারিগরী প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে ডাঃ পাল যে ভাবে রোগীকে সুস্থ করে তুলেছেন তা সত্যিই ধন্যবাদের যোগ্য। তবে শুধু এই রোগীর ক্ষেত্রেই নয় বরং প্রত্যেক ক্যানসার রোগীর ক্ষেত্রেই আমরা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে রোগীর সুস্থতাকে ত্বরান্বিত করতে সচেষ্ট থাকি।”