প্রদীপ মজুমদার, নদীয়াঃ ইটভাটায় কর্মরত শ্রমিক পরিবারের ছেলেমেয়েদের জন্য সরস্বতী পুজো করলেন এক গৃহবধূ। নদীয়ার মাজদিয়া দুর্গাপুর গ্রামের ইটভাটার ঘটনা।
মাজদিয়ার বাসিন্দা পাপিয়া কর পেশায় গৃহবধূ হলেও তার ইচ্ছে পথ শিশুদের মধ্যে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়া। ২০১০ সাল থেকে তিনি মাজদিয়া শ্রীনিবাসের মন্দির সংলগ্ন মাঠে খোলা আকাশের নিচে প্রথম পথ শিশুদের পড়াতে শুরু করেন। ২০১০ থেকে ২০১২ দু’বছর ৪৭ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে ফুলপাখিদের আসর নামে স্কুলটা তিনি শুরু করেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি সেই সময় আর স্কুল টা চালাতে পারেননি।
এরপর ২০১৮ সালের নভেম্বর মাস থেকে ধর্মতলায় আবার ফুলপাখিদের আসরের দ্বিতীয় ইউনিট চালু হয় ট্রাম গুমটির ফুটপাতে। সেখানে প্রতি রবিবার পাপিয়া নিয়ম করে পথশিশুদের নিয়ে পড়াশোনা করান।
এরই মাঝে প্রত্যেক দিন বিকেল বেলায় পাপিয়া দেবী মাজদিয়ার দুর্গাপুর ইটভাটায় ইটভাটার কর্মরত শ্রমিক পরিবারের ছেলেমেয়েদের নিয়ে স্কুল চালু করেন। ফুলপাখিদের আসরে পড়ার নিয়মিত পাপিয়া দেবী। আর আজ তাই সেই ইটভাটাতেই শুরু হয় বিদ্যার দেবী সরস্বতীর আরাধনা।
গৃহবধূ পাপিয়া কর বলেন, ওরা আগে দেখেছে কিন্তু কোনদিনও সরস্বতী পুজো নিয়ে আনন্দে মেতে উঠতে পারেনি। তাই আজকে ওদের আনন্দ দিতেই ছোট্ট একটা আয়োজন করলাম। ওরা বছরে দু-তিন মাস থাকে না চলে যায়, বর্ষার সময় আবার আসে। পরিযায়ী বলতে পারেন। সেই কারণে এদের পড়াশোনা সেভাবে হয়না।মা বাবা যেহেতু সারাদিন ইট ভাটায় কাজ করে সেহেতু বাচ্চাদের কেউ বাধ্য হয়ে মা বাবার সঙ্গে হাতে হাতে কাজ করতে হয়। আমি ঘরে বসেই থাকি তাই ভাবলাম এদেরকে নিয়ে একটা স্কুল করি। যেমন ভাবা তেমন কাজ। আরে স্কুলের সরস্বতী পূজা হবেনা তাই কি হয়?