হীরক মুখোপাধ্যায় :- যতটা গর্জন ছিল ঠিক ততটা বর্ষাতে পারলনা, আর তাই রাজ্যের বুকে প্রতীকী ধর্মঘটে তেমন কোনো সাড়া ফেলতে পারল না ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল হেল্থ মিশন জয়েন্ট এসোসিয়েশন’।
একটা সফল আন্দোলন গড়ে তুলতে গেলে হাতে যেসব রসদ থাকা আবশ্যক তার থেকেও অনেক অনেক বেশি প্রারাম্ভিক রসদ থাকা সত্ত্বেও কেনো যে এই সংগঠন তাদের আন্দোলনে অসফল হল ভবিষ্যতে হয়তো তার দিশা পাওয়া যাবে।
কর্মে নিশ্চয়তা, স্থায়ীকরণ, বেতন কাঠামোর পুনর্বিন্যাস, চাহিদা অনুযায়ী বদলী, শূন্যপদ পূরণ, আউটসোর্সিং বন্ধ সহ একাধিক জ্বলন্ত দাবী হাতে থাকার পরেও ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল হেল্থ মিশন জয়েন্ট এসোসিয়েশন’-এর আজকের আন্দোলন সেভাবে রাজ্যের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করতে পারলনা।
বেলা দেড়টা নাগাদ স্বাস্থ্য ভবন থেকে জানানো হয়েছে, “কয়েক ঘণ্টার কর্মবিরতিতে কোনো প্রভাবই পড়েনি রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ।”
স্বাস্থ্য ভবনের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা থেকে যে খণ্ডচিত্র উঠে এসেছে তাও সংগঠনের পক্ষে খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি দক্ষিণ বঙ্গেও আজকের আন্দোলন কর্মীদের মধ্যে সেভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি।
দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, বীরভূম, বাঁকুড়া, বর্ধমান সব জেলার স্বাস্থ্য প্রশাসনের তরফেও জানানো হয়েছে, “কর্মবিরতির সেরকম কোনো প্রভাব পড়েনি।”
কেনো আজকের কর্মবিরতি সর্বাঙ্গীন সফল হলনা, এবিষয়ে জানতে চাইলে সংগঠনের তরফে যুক্তিগ্রাহ্য কোনো উত্তর পাওয়া না গেলেও, সংগঠনের ছাতার তলায় থাকা বিভিন্ন সংগঠনের নেতানেত্রীরা জানিয়েছেন, “আন্দোলনের আয়োজকদের আন্তরিকতার অভাব ছিলনা, কিন্তু এত কম সময়ের মধ্যে কর্মবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছিল যে সমস্ত কর্মীদের সঙ্গে হয়তো যোগাযোগ করে ওঠা সম্ভব হয়নি। সম্ভবত তাই এই অসফলতা।”
যদিও ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল হেল্থ মিশন জয়েন্ট এসোসিয়েশন’-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “কর্মবিরতি ছিল সর্বাত্মক। এই আন্দোলন দেখে রাজ্য সরকারকে দ্বিতীয়বার অবশ্যই ভাবতে হবে।”
এই মুহুর্তে পশ্চিমবঙ্গের বুকে যেকটা স্বাস্থ্য সংগঠন আন্দোলন করে তাদের সবারই রেজিস্ট্রেশন নম্বর থাকলেও মুষ্টিমেয় কয়েকটা সংগঠনকেই ইউনিয়ন রূপে স্বীকৃতি দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকার। এর বাইরে যারা আছেন তাদের আন্দোলনও যদি এই জাতীয় জোলো আন্দোলন হয়ে দাঁড়ায় তবে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের দাবিদাওয়া যে কবে মিটবে সেটাই সব থেকে বড়ো প্রশ্ন।