খাদিমুল ইসলাম , বানারহাট :- গুজব ও ভুল তথ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ডুয়ার্স থেকে মুখ ফিরিয়েছে পর্যটকরা। এমনটাই মনে করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে বেশ কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এক ভিডিওতে দেখা গেছে, ডায়না নদীর জলে প্লাবিত হয়েছে “উল্টো বাড়ি”, আবার কোথাও দেখা গেছে ডুয়ার্স ফানসিটি পুরোপুরি প্লাবিত। যদিও বাস্তবে “উল্টো বাড়ি” সম্পূর্ণ সুরক্ষিত রয়েছে। তার জ্বলন্ত প্রমাণ হিসেবে কালীপুজোর মুখে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে টয় ট্রেন পরিষেবা চালু করা হয়েছে। পর্যটকদের বিনোদনের জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।ডুয়ার্সের বন্যায় পর্যটন ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একাধিক রিসোর্ট এবং হোমস্টে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভুয়া প্রচারের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে, যার ফলে ডুয়ার্স থেকে মুখ ফিরিয়েছে পর্যটকরা। কালীপুজোর আগে ব্যবসায়ীরা নতুন উদ্যোগ নিয়ে পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। রাস্তা ও রিসোর্ট সংস্কার করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তারা।উত্তরবঙ্গের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা ডুয়ার্স হঠাৎ হড়পা বানের কবলে পড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে নদীর জল পর্যটন কেন্দ্রগুলিতেও প্রবেশ করেছে, যার ফলে একাধিক রিসোর্ট, রাস্তা, নজর মিনার এবং ইকোপার্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরই মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়িয়েছে যে নদীর ধারে থাকা “উল্টো বাড়ি” এবং “উল্টো তাজমহল” খ্যাতনামা ফানসিটি পর্যটন কেন্দ্র পুরোপুরি প্লাবিত হয়েছে। বাস্তবে সেই কেন্দ্রগুলো কোনো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এই ভুল তথ্যের কারণে একের পর এক বুকিং বাতিল করতে শুরু করেছেন পর্যটকরা।গত ৫ অক্টোবর রবিবার হঠাৎ হড়পা বানে প্লাবিত নদী সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পানি প্রবেশের ফলে পর্যটন ব্যবসা থমকে যায়। নদীর জল প্লাবিত হওয়ায় পর্যটকরা একের পর এক বুকিং বাতিল করতে বাধ্য হন। তবে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে এবং ডুয়ার্সে জীবন-যাত্রার ছন্দ ফিরছে। ব্যবসায়ীরা অবস্থা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন।ডায়না নদীর ধারে অবস্থিত ডুয়ার্স ফানসিটি পর্যটনকেন্দ্রে চালু করা হয়েছে টয় ট্রেন পরিষেবা, যা পর্যটকদের বিনোদনের সঙ্গে ব্যবসার আকর্ষণ বাড়াবে। একই সঙ্গে আজ থেকে গরুমারা জাতীয় উদ্যানের জঙ্গল সাফারিও পুনরায় শুরু হয়েছে। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, কালীপুজোর আগে পর্যটক সংখ্যা বাড়বে এবং পর্যটন কেন্দ্রগুলো দ্রুত স্বাভাবিক হবে।ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসায়ী শেখ জিয়াউর রহমান বলেন, “ডায়না নদীর জল আমাদের পর্যটন কেন্দ্রে ঢুকে পড়েছিল। রিসোর্ট, রাস্তাঘাট, একটি প্রাচীর এবং নজর মিনার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তবে সেগুলি মেরামত করা হয়েছে। আজ থেকে টয় ট্রেন পরিষেবা চালু হয়েছে। আশা করি, এই দুর্যোগ কাটিয়ে পর্যটক আবারও ডুয়ার্সে ফিরবেন।”কলাবাড়ির বাসিন্দা প্রতিমা ছেত্রী জানান, “ডায়না নদীর জল আমাদের পর্যটনকেন্দ্রে ঢুকেছিল। তবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জল নেমে যায় এবং তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে।”পর্যটন ব্যবসায়ীদের বিশ্বাস, নতুন আকর্ষণগুলো পর্যটকদের ফিরিয়ে আনবে এবং ডুয়ার্সের পর্যটন কেন্দ্রগুলো আবারও প্রাণ ফিরে পাবে।