ঋদ্ধি ভট্টাচার্য, কোলকাতা:-কথাসাহিত্যিক ভারতীয় গোয়েন্দা বা ব্যোমকেশ বক্সী (সত্যান্বেষী) শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ই তৈরি করেছিলেন এবং ১৯১৩ সাল থেকে পাঠকদের মনমুগ্ধ করেছেন। গোয়েন্দা বলতে বাঙালিদের মনে উঁকি দেয় প্রথমেই ফেলুদা বা ব্যোমকেশ। কিন্তু সেটি ছাড়াও আছে মিতিন মাসি এবং আরো অনেক কিছুই। সম্প্রীতি আবার নতুন ভাবে সৃষ্টি হয়েছে একেনবাবু। আজকালের এই ব্যস্তময় জীবনে নতুন ভাবে দর্শকের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে ওয়েব সিরিজ। কেনই বা তা হবে না! দিনের ব্যস্ততার মধ্যে যখন সময় হয় তখনই যেনো সময় সুযোগ করে দেখে নেওয়া যায় এটি।
আমি ব্যোমকেশ বক্সী এবং ফেলুদার গল্প পড়ে বড় হয়েছি,তাই এগুলি আমার শৈশবের এক টুকরোটির মতো আমি এখনও ধরে রেখেছি।এই কারণেই,যখন আমি জানতে পেরেছিলাম যে বাংলা স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম হইচইতে ব্যোমকেশের একটি নতুন অভিযোজন রয়েছে,তখন আমি কোনও সময় নষ্ট না করে প্রথম থেকে দেখে আসছি।এই সিরিজের ৫ নম্বর সিসন এই বছরের ১০-ওই জানুয়ারি মুক্তি হয়েছিল।
ব্যোমকেশের ভূমিকায় অনির্বাণ ভট্টাচার্য যা অভিনয় করেছেন তা সুসজ্জিত।এটি গল্পগুলির পুনরায় ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে না এবং বইগুলির প্রতি খুব বিশ্বস্ত।যদি আপনি আপনার সমস্ত ব্যোমকেশ বক্সীর গল্প মনে রাখেন তবে এটি বেশ আকর্ষণীয়,আমি সঙ্গীযুক্ত চরিত্রগুলি পেয়েছি,বিশেষত ব্যোমকেশের বন্ধু এবং ডানহাতি মানুষ অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় (সুব্রত দত্ত অভিনয় করেছেন) খুব প্রিয় এবং মোহনীয়।এই সিরিজে আমি যে জিনিসগুলি সবচেয়ে বেশি উপভোগ করেছি তার মধ্যে একটি ছিল ১৯৩০ এর দশকের কলকাতার মনোমুগ্ধকর চিত্র,যা এত সুন্দরভাবে পুনরায় তৈরি করা হয়েছে,এই শোটির ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতা-‘কলকাতা সম্পর্কে শুনেছি তবে কখনও দেখিনি’l
গত কয়েক বছর ধরে ব্যোমকেশের জনপ্রিয়তা বেড়েছে এবং প্যান-ইন্ডিয়া স্তরে পৌঁছেছে।বলিউড অভিনেতা রাজিত কাপুর এবং আরও সম্প্রতি সুশান্ত সিং রাজপুত যথাক্রমে ছোট এবং বড় পর্দায়,বাংলা ছবিতে আবির চ্যাটার্জী,জিশু সেনগুপ্ত এমনকি সুপারস্টার উত্তম কুমারের মতো অনেক কিংবদন্তি অভিনেতা ব্যোমকেশকে প্রাণবন্ত করেছেন।সমস্ত চাপ সত্ত্বেও অনির্বাণ ভট্টাচার্য এর অভিনয় প্রশংসনীয়।
আসলে ফিল্ম কম্পোটিয়েনের সাথে একটি সাক্ষাত্কারে অনির্বাণ বলেছিলেন,“যখন আমাকে এই চরিত্রটির জন্য যোগাযোগ করা হয়েছিল,তখন তিনি ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। তিনি ভাবছিলাম যে এক্সপ্লোর করার নতুন কিছু বাকি আছে কি না। উত্তম কুমার থেকে আবির চ্যাটার্জী থেকে জিশু সেনগুপ্ত পর্যন্ত অনেক বড় তারকাদের ভূমিকা রচনা করেছেন।তবে এটি নিজেই একটি চ্যালেঞ্জ l”
ব্যোমকেশের প্রথম সিসন (২ এপিসোর্ড) ‘আর্থমআনার্থম’ ও ‘মাকড়সার রস’ নামে দুটি গল্প অবলম্বনে তৈরি l ব্যক্তিগত ভাবে দুটি ভিন্ন স্বাদের গল্প-দারুন কাজ l
দ্বিতীয় সিসন (৩ এপিসোর্ড) ব্যোমকেশ সত্যম হত্যার রহস্য সমাধান করেছেন।এই সিরিজটি ২ এপিসোর্ড ব্যোমকেশের আরও সেরা বিক্রেতা ‘রক্তের দাগ’ অবলম্বনে l
“রক্তমুখী নীলা”- একটি স্পেশাল এপিসোর্ড
ব্যোমকেশের তৃতীয় সিসন (২ এপিসোর্ড) ‘শজারুর কাঁটা’ গল্প অবলম্বনে তৈরি।এই মরসুমে ব্যোমকেশ এমন হত্যার তদন্ত করেছিলেন যা তীক্ষ্ণ তুষারপাতের কুঁচি ব্যবহার করে সংঘটিত হয়েছিল।
ব্যোমকেশ চতুর্থ সিসন (২ এপিসোর্ড)’অগ্নিবাণ’ অবলম্বনে নির্মিত।গল্পটি শুরু হয় ব্যোমকেশের প্রতিবেশী রেখা নামে একটি অল্প বয়সী মেয়েকে নিয়ে, যে তার রান্নাঘরে কিছু রহস্যজনক পরিস্থিতিতে মারা যায়। ব্যোমকেশ এই তদন্তের দায়িত্ব নেন এবং এখান থেকে ব্যোমকেশের তদন্ত শুরু হয়।
ব্যোমকেশ পঞ্চম সিসন (২ এপিসোর্ড) ‘দুষ্টচক্র’ এবং ‘খুঁজি খুঁজি নারি’ অবলম্বনে।অজিতের চরিত্রে অভিনয় করা সুপ্রভাত দাস বাদে সব কাস্ট একই রকম রয়েছে এই মরসুমে l