খাদিমুল ইসলাম,ডুয়ার্স: দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর পাহাড়-সমতলের মধ্যে গড়াতে পারে টয়ট্রেনের চাকা। আগামী ১৬ নভেম্বর শনিবার নতুন করে সবুজ পতাকা দেখতে পারে নিউ জলপাইগুড়ি জংশন-দার্জিলিং টয়ট্রেন। পরীক্ষামূলক যাত্রা সফল হওয়ায় দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে খবর। বৃহস্পতিবার কয়েকটি এলাকা সরেজমিনে পরীক্ষা করেন ডিএইচআরের ডিরেক্টর প্রিয়াংশু। সঙ্গে ছিলেন রেলের বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়াররা। মেরামতি সংক্রান্ত কাজ সম্পর্কে তাঁরা সন্তোষপ্রকাশ করাতেই ট্রেন চালানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে রেল সূত্রে খবর।উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জলকিশোর শর্মা বলছেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত সমস্ত এলাকার মেরামতির কাজ শেষ হওয়ার পর পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালিয়ে ট্র্যাক পরীক্ষা করা হয়েছে। সফল হয়েছে সেই পরীক্ষামূলক যাত্রা। নতুন করে কোনও সমস্যা দেখা না দিলে ১৬ নভেম্বর থেকে পুনরায় এনজেপি-দার্জিলিং টয়ট্রেন চলাচল করবে।’
বর্ষার সময় ধসে গিয়েছিল পাগলাঝোরায় ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক। প্রবল বর্ষণ এবং ধসের জেরে তিনধারিয়া, চুনাভাটি সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্ধ হয়ে যায় পাহাড়-সমতলের মধ্যে টয়ট্রেন চলাচল। যদিও বর্ষার সময় প্রতি বছরই পাহাড়ে এমন ঘটনা ঘটে, যার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ব্রেক জার্নি করিয়ে সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখার চেষ্টা করে ডিএইচআর। কিন্তু এবছর সে পথে হাঁটতে পারেনি রেল। কারণ, শুধু পাহাড় নয়, সমতলের একাধিক জায়গাতেও রেললাইনের তলা থেকে মাটি সরে যায়। পাশাপাশি, নজরদারির অভাবে যে অনেক জায়গায় রেলট্র্যাক দীর্ঘদিন থেকে ক্ষতিগ্রস্ত, সেটাও সামনে আসে। যার জেরে বর্ষা পরবর্তী সময়েও পাহাড়-সমতলের মধ্যে টয়ট্রেন চলাচল করেনি।
টয়ট্রেন বন্ধের কারণ জানতে চাওয়ার পাশাপাশি পরিকাঠামো উন্নয়নে নজর দেওয়ার পরামর্শ দেয় ইউনেসকো। এরপরেই ‘টনক’ নড়ে রেলের। দ্রুতগতিতে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কাজের অগ্রগতি দেখতে সম্প্রতি তিনধারিয়া যান এডিআরএম (এনজেপি) সঞ্জয় চিলওয়ারওয়ার। ১৫ অক্টোবরের আগে সমস্ত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন তিনি, যা শেষ হয় মঙ্গলবার। এরপরেই বুধবার পরীক্ষামূলকভাবে এনজেপি এবং দার্জিলিংয়ের মধ্যে একটি ট্রেন চালানো হয়।
কয়েকদিন আগে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত টয়ট্রেন বাতিলের কথা জানায় উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। নতুন করে এই সংক্রান্ত আর কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। এক রেল আধিকারিকের বক্তব্য, ‘তেমন হলে ব্রেক জার্নির পথেও হাঁটা হবে। তবে বেশিদিন আর বন্ধ রাখা হবে না এনজেপি-দার্জিলিং টয়ট্রেন।’