30 C
Kolkata
Tuesday, February 18, 2025
বিশ্ব বাংলা নিউজজেলাধূপগুড়ি থানার কালীপুজো মায়াবী কাঁঠাল গাছের অলৌকিক ফলের নৈবেদ্য

ধূপগুড়ি থানার কালীপুজো মায়াবী কাঁঠাল গাছের অলৌকিক ফলের নৈবেদ্য

খাদিমুল ইসলাম, বানারহাট : ধূপগুড়ি থানার কালীপুজো মায়াবী কাঁঠাল গাছের অলৌকিক ফলের নৈবেদ্য ”কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব কাঁঠাল ছায়ায়” – কবির বর্ণনায় যেমন কাঁঠাল গাছের কথা রয়েছে তেমন কাঁঠাল ফলও আবহমান কাল ধরে হয়ে উঠেছে বঙ্গ জীবনের অঙ্গ। শুধু বিখ্যাত কবি জীবনানন্দ দাসের কবিতায় নয়, কাঁঠালের কথা রয়েছে প্রাচীন গ্রন্থ ও পুরাণে তথা রামায়ণে । পনস বা কন্টকি ফল হিসেবে কাঁঠালের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলার লোককথা। জলপাইগুড়ির লোককথা, প্রবাদ ও ধাঁধার সঙ্গে সঙ্গে জড়িয়ে আছে কাঁঠাল -একনা বুড়ি/ সারা গায়ে ফুসুরি।’ আর জলপাইগুড়ির অন্যতম প্রাচীন শহর ধূপগুড়ি যেখানে আইনরক্ষকদের ধর্মাচরণের সঙ্গে জড়িয়েছে কাঁঠাল। আজ নয় যুগযুগ ধরে ধুপগুড়ি থানার কালীপুজোর নৈবেদ্য কাঁঠাল। এখানে জীবনানন্দের মায়াময় কাঁঠাল গাছের ফল হয়ে উঠেছে অলৌকিক। পুজোয় অলৌকিক ফলের নৈবেদ্য হওয়ার আশ্চর্য কথকতা অবাক করে দেওয়ার উপাদানে টইটম্বুর।জলপাইগুড়ি জেলার অন্যতম প্রাচীন জনপদ কৃষি প্রধান শহর ধুপগুড়ি, বর্তমানে উত্তর পূর্ব ভারতের সঙ্গে ব্যবসায়িক যোগসূত্র নিবিড় হবার সুবাদে বেড়েছে বসতি, প্রশাসনিক ব্লক থেকে হয়েছে মহকুমা।
ব্রিটিশ আমলে স্থাপিত থানার আধুনিকীকরণ যেমন হয়েছে, তেমনি পাশাপাশি রয়েছে দক্ষ পুলিশ কর্মীদের নিয়ে গঠিত টিম।এরই সঙ্গে কয়েক বছর আগে নতুন আঙ্গিকে নির্মিত হয়েছে থানার কালী মন্দির।
তবে মন্দিরের সাজসজ্জা বদলালেও বদল হয়নি ৭০ বছর ধরে চলে আসা কালী পুজোর রীতিনীতি।
আজও কালী পুজোর রাতে থানা চত্বরে থাকা কাঠাল গাছের কাঠাল দিয়ে মাকে নিবেদন করা হয় বিশেষ ভোগ। অলৌকিক ফলের নৈবেদ্য দিয়েই হয় পুজো।
অলৌকিক ফলের নৈবেদ্য প্রসঙ্গে , ধুপগুড়ি থানার কালী মন্দিরের বর্তমান পুরোহিত নিরঞ্জন চক্রবর্তী জানান, আমি আজ ৩০ বছর ধরে থানার এই কালী মন্দিরে মায়ের পুজো করে আসছি।এবারও থানা চত্বরে যে কাঠাঁল গাছটি রয়েছে সেই গাছের কাঠাল দিয়েই পুজোর রাতে বিশেষ ভোগ নিবেদন করা হবে মাকে। পাশাপাশি,ধূপগুড়ি থানার আইসি অনিন্দ্য ভট্টাচার্য বলেন, “আমি যখন এই থানায় প্রথম এসেছিলাম , তখন থেকেই এই কাঁঠাল গাছের গল্প শুনে আসছি। প্রতি বছর পুজোর আগে এটি ফল দেয় এবং আমরা এই ফল দিয়ে মাকে ভোগ দিই।”
কালীপুজোর দিন, পুলিস সুপার সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ব্যক্তিরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন। পুলিস কর্মীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করেন।এই অলৌকিক কাঁঠাল গাছ ধূপগুড়ি থানার কালীপুজোকে আরও অন্যমাত্রা দিয়েছে, কাঁঠাল গাছ ও ফল হয়েছে বিশ্বাস ও আধ্যাত্মিকতার এক অনন্য মিশ্রণ। সবচাইতে আশ্চর্য বিষয় এমন দুটো কাঁঠাল যার একটি পাকা অপরটি এঁচোড় অবস্থায় থাকে। ফল আসতে দেরি হলে থানার আধিকারিকরা খুব আশঙ্কায় থাকেন। আশঙ্কা, এবার তাহলে মাকে আর কাঁঠালের ভোগ দেওয়া যাবে না? অথচ আশ্চর্যজনকভাবে কখনই আশঙ্কা সত্যি হয় নি। দেখা যায়, থানার গাছে দুটি কাঁঠাল ফল হবেই। ফলশ্রুতি, একটি ফল নৈবেদ্যে এবং অপর এঁচোড়টি মায়ের ভোগ রান্নায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। মায়াময় আর অলৌকিক মিশে যায় আধ্যাত্মিকতায়।।

বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন বিশ্ব বাংলা নিউজের ওয়েবসাইট এ।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
3,912FollowersFollow
22,200SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles