মোহাম্মদ শাজাহান আনসারী ,বাঁকুড়া: বড়জোড়ার সাহারজোড়া গ্রামে মাটির মূর্তি তৈরী করে দুর্গা পূজা করা সম্পূর্ণ রুপে নিষিদ্ধ। পূজোর চারটি দিন এখানে মহামায়া মন্দির চত্বরে আলাদাভাবে ঘটে দেবী দুর্গা পূজিতা হন।এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেল, অনেক কাল আগে এই গ্রামের মাঠে এক কৃষক জমিতে লাঙ্গল দিচ্ছিলেন। সেই সময় তার লাঙ্গলের ফলায় এক প্রস্তর খণ্ডে আঘাত লাগে। এই ঘটনার পরপরই জমি রক্তে লাল হয়ে যায়। ভীত সন্ত্রস্ত চাষী লাঙ্গল উঠিয়ে বাড়ি ফিরে যান। পরে স্থানীয় রাজাকে দেবী স্বপ্নাদেশ দেন ও সেখান থেকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে তাঁকে মহামায়া হিসেবে নিত্য পূজার নির্দেশ দেন। পরবর্ত্তী সময়ে গ্রামের এক শ্রেণীর যুবক মাটির দেবী প্রতিমা এনে দুর্গা পূজা করার চেষ্টা করলে ব্যর্থ হন। দৈব নির্দেশে তখন থেকেই গ্রামে প্রতিমা এনে দুর্গা পূজা নিষিদ্ধ হয়। তবে ওই মন্দির চত্বরেই আলাদা একটি টিনের ঘরে ঘট স্থাপন করে দেবী দুর্গার আরাধণা করার প্রথা এখনও চলে আসছে। মন্দিরের পূরোহিত বাসুদেব রায় আদ্যাশক্তি মহামায়ার পূজা শুরুর ইতিহাস বর্ণণা করে বলেন, দূর দূরান্ত থেকে মানুষ এখানে আসেন। ‘মা কাওকে খালি হাতে ফেরাননা, সকলের মনোস্কামনা পূরণ করেন’। পূজোর চারটি দিন আলাদাভাবে ঘট স্থাপন করে দেবী দুর্গার পূজা করা হয়। এখানে পূজার অন্যতম বৈশিষ্ট জল ঘড়ি দেখে সন্ধি পূজার সময় নির্দ্ধারণ করা হয়। এছাড়াও গ্রামের মড়ল পাড়ার পুকুর পাড়ে যে শাঁখারির কাছ থেকে ‘মা’ শাঁখা পরেছিলেন, সেই শাঁখারির পরিবার এখনও নিয়ম করে পূজার সময় শাঁখা পৌঁছে দিয়ে যান বলে তিনি জানান।