খাদিমুল ইসলাম, বানারহাট :- গ্রামের রাজুর হাতে আটক খুনের অপরাধীকে ফাঁসির নির্দেশ দিলো আদালত।
ভোর বেলায় গ্রামের পথে রক্তমাখা রুমাল হাতে ওড়া কারা? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চরম সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে খুনিদের আটক করেছিলো রাজু, সোমবার অভিযুক্তকে ফাঁসির সাজা দিলো আদালত। ২০২৩ সালের ২৭ শে জুলাইয়ের রাত, স্থান জলপাইগুড়ি জেলার সাকোয়াঝড়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন আংগ্রাভাসা গ্রামের মেহতাব আলমের বাড়ি।
হঠাৎ ভোর রাতে প্রতিবেশী মেহতাব আলমের স্ত্রীর আর্তনাদে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল প্রতিবেশী যুবক রাজু ইসলামের। আর্তের চিৎকারে সাড়া দিয়ে রাজু ছুটে গিয়েছিল মেহতাব আলমের বাড়ি, ঘরে তখন রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝে পরে মেহতাব আলম সহ তার স্ত্রী। পরিস্থিতি বুঝেই দ্রুত পাড়ার আরো কয়েকজন কে সঙ্গী করে আহতদের নিয়ে হাসপাতালে ছুটে যায় রাজু, গাড়িতেই আহত মেহতাব আলমের স্ত্রী জানিয়েছিল দিল্লি থেকে তার ভাগ্নে কিছু লোকজন নিয়ে এসে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, তারা সবাই হিন্দিভাষি। হাসপাতালে মেহতাব আলমকে মৃত ঘোষণা করে মৃতের আহত স্ত্রীকে জলপাইগুড়ি রেফার করে চিকিৎসক।
এরই মধ্যে আঙ্গরা ভাষা গ্রামে ভোর হয়েছে, সঙ্গীদের নিয়ে গ্রামে ফিরছে রাজু হঠাৎ চোখে পরে গ্রামের পথ ধরে কয়েকজন হিন্দিতে কথা বলতে বলতে এগিয়ে যাচ্ছে, হাতে রক্তমাখা রুমাল। রাজুর সময় লাগেনি বুঝতে এরা কারা,
চরম সাহসিকতা দেখিয়ে আগন্তুকদের পথ আটকে দাড়ায় রাজু, । আটক হয়ে যায় ভিন রাজ্যের চার জন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ , আটক ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। শুরু হয় খুনের মামলা।সোমবার সেই খুনের মামলায় মূল অভিযুক্ত মৃত মেহতাব আলমের ভাগ্নে আফতাব আলমের ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেন জেলা ও দায়রা আদালত।
এই প্রসঙ্গে মৃত মেহতাব আলমের স্ত্রী মৌমিতা দাস জানান, আমাদের সহ্য করতে পারত না আফতাব, ওর বোনকে আমার স্বামী কলেজ পর্যন্ত পড়ায়, তারপর সেই মেয়ে পালিয়ে যায়, তখন থেকেই আফতাবের রাগ যেন আরো বেড়ে যায় আমাদের ওপরে। অপরদিকে এই মামলায় মৃত মেহতাব আলমের আইনজীবী, প্রণব ব্যানার্জি বলেন, এই মামলায় আদালত গত শনিবার বিচারপ্রক্রিয়া সমাপ্ত করে রায় দান স্থগিত রেখেছিল আজ আদালত অপরাধী আফতাব আলমকে সর্বোচ্চ শাস্তি, ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন। গ্রামের হিরো রাজু ইসলাম বলেন, আমি দারুণ খুশি অভিযুক্তকে সাজা ঘোষনা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন ও খুব দ্রুততার সাথে পদক্ষেপ করেছিল। প্রতিটি মানুষেরই উচিৎ এইভাবে অসহায় বিপদগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানো।