মোহম্মদ শাহাজান আনসারী, বাঁকুড়াঃ আর জি কর কান্ডে যখন গোটা দেশ তোলপাড় সেই আবহে বিষ্ণুপুরের জঙ্গলে বধূর অর্ধনগ্ন মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে এবার শুরু হল রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির দাবী ওই মহিলাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ। বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে তৃনমূলের দাবী পুলিশ ঘটনার যথাযথ তদন্ত করছে। এদিকে এই ঘটনাকে ঘিরে তৈরী হওয়া বিতর্ক এড়াতে গতকালই মহিলার দেহের ময়না তদন্ত বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে না করিয়ে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে করায় পুলিশ। ময়না তদন্তের ভিডিওগ্রাফিও করা হয়। ময়না তদন্তকারী চিকিৎসকদের প্রাথমিক অনুমান খুন নয়, জঙ্গলের মধ্যে ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে বিষধর সাপের কামড়ে।
জঙ্গলে কাঠ কুড়াতে গিয়ে গত শনিবার থেকে নিখোঁজ হয়ে যান বিষ্ণুপুর থানা এলাকার বছর ৪৫ এর এক গৃহবধূ। রবিবার গ্রাম লাগোয়া গভীর জঙ্গলে বধূর অর্ধনগ্ন দেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে প্রথমে বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সাধারণত বিষ্ণুপুর মহকুমা এলাকায় কোনো ব্যক্তির অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালেই ময়না তদন্ত করা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে তা করা হলে বিতর্ক তৈরী হতে পারে সেই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে দেহটি নিয়ে যাওয়া হয় উন্নত পরিকাঠামোযুক্ত বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের মর্গে। গতকাল সন্ধ্যায় সেখানে ভিডিওগ্রাফি সহযোগে দেহের ময়না তদন্তের পর বধূর দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। সূত্রের খবর ময়না তদন্তে চিকিৎসকরা ওই বধূর মৃত্যুর কারণ হিসাবে প্রাথমিকভাবে বিষধর সাপের কামড়কেই দায়ী করেছেন। যদিও ওই বধূকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে বলেই এখনো মনে করছে মৃতার পরিবার। এদিকে এই ঘটনাকে ঘিরে নতুন করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। গতকাল ময়না তদন্তের সময় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের মর্গে হাজির ছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। সন্ধ্যায় মৃতার বাড়িতে যান ওন্দার বিজেপি বিধায়ক অমরনাথ শাখা ও সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামী। সেখানে গিয়ে তাঁদের দাবী ওই বধূকে সাপে কামড় দিলে তিনি অন্তত বাড়িতে ফিরে আসার সময় পেতেন। তাঁদের প্রশ্ন সাপের কামড়ে মৃত্যু হলে দেহটি অর্ধনগ্ন অবস্থায় পড়ে ছিল কেন? বিজেপির দাবী ওই মহিলাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এখন আসল ঘটনা ধামাচাপা দিতেই সাপের কামড়ের তত্ব আনার চেষ্টা হচ্ছে। অভিযোগ উড়িয়ে তৃনমূলের দাবী পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। যদি ওই মহিলার প্রতি কোনো অন্যায় হয়ে থাকে তবে নিশ্চিত ভাবেই দোষীরা শাস্তি পাবে।