খাদিমুল ইসলাম, ধুপগুড়ি :- গরু পাচারের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ জনতার ।পুলিশের লাঠিচার্য , বচসা বিক্ষোভকারি জনতার সাথে । ঘটনা টি ঘটেছে শনিবার মধ্যরাতে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িতে । ভারতীয় দল বিশ্বকাপ জেতার খুশিতে উচ্ছাসে মেতে উঠেছিলো গোটা ধূপগুড়ি শহর ।বিভিন্ন ক্লাবের তরফ থেকে জাতীয় পতাকা নিয়ে বের হয়া হয়েছিলো বীজয় মিছিল । আর তাতেই আটকে যায় গরু বোঝাই পিকাপ ভ্যান। গরু পাচারের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ জনতার।পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের লাঠিচার্জের অভিযোগ ।
ঘটনা ঘটেছে এ দিন রাতে ধূপগুড়ি চৌপতি এলাকায়। আনুমানিক সাড়ে বারোটা নাগাদ। ভারতীয় দল বিশ্বকাপ জেতার খুশিতে উচ্ছ্বাসে মেতে উঠে গোটা ধূপগুড়ি শহর। বিভিন্ন ক্লাবের পক্ষ থেকে বের করা হয় উল্লাস মিছিল জাতীয় পতাকা নিয়ে। আর সেই সময় দ্রুত গতিতে একটি পিকআপ ভ্যান জলপাইগুড়ি থেকে গয়েরকাটা দিকে ছুটছিলো।সেই উল্লাসের ভিড়ের মধ্যে আটকে যায় গাড়িটি, তখন উৎসাহী জনতা গাড়ি চালকের কাছে যান কি কারনে এত দ্রুত গতিতে পালাচ্ছিল সে। এমনকি উৎসাহী যুবকরা সেই পিকআপ ভ্যান টিতে উঁকিঝুঁকি মারতেই দেখতে পান চার পাঁচটি গরু দড়ি দিয়ে বেঁধে প্লাস্টিক চাপা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আর এই দৃশ্য দেখা মাত্রই গরু পাচারের তথ্য উঠে আসে।
এরপর চালকের সাথে ওই ভারতীয় দলের সমর্থকদের বাকবিতোন্ডা শুরু হয়। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। এরপর যুবকরা গাড়িটি তল্লাশি করে দেখতে পায় গাড়ির মধ্যে প্লাস্টিকে মোরে গরু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তখনই গাড়িটিকে আটক করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে ভারতীয় সমর্থকরা। এবং পুলিশ গাড়িটিকে আটক না করে ছেড়ে দেয়।
এরপরই পুলিশ কে ঘিরে শুরু হয় বিক্ষোভ। উত্তেজিত জনতার সাথে বচসা শুরু হয় পুলিশের। এরপর ধূপগুড়ি থানা থেকে বিশাল পুলিশবাহিনী আসে ঘটনা স্থলে শুরু করে লাঠিচার্জ উত্তেজিত জনতাকে ছাত্র ভঙ্গ করতে।
স্থানীয় বাসিন্দা বলরাম ঘোষ বলেন, ভারত এত বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে তাই খুশিতে ছেলেকে নিয়ে চৌপতিতে এসেছিলাম। বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর মানুষ সেলিব্রেশন করছিল। ঢাক ঢোল নিয়ে। সেই সময় একটি পিকআপ ভ্যান দ্রুত গতিতে দিক থেকে ছুটে আসে। যারা সেলিব্রেশন করেছিল তাদেরকে এড়িয়ে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এতেই ওখানে উপস্থিত সকলের সন্দেহ হয়। সকলে গাড়ি চালক কে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তখন সে জানায় গরু রয়েছে।আমরা দেখতে পাই চার-পাঁচটি গরুকে দড়ি দিয়ে বেঁধে প্লাস্টিক চাপা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।রাত সাড়ে বারোটা তখন। এটা দেখে সকলের সন্দেহ হয়। তারপরে খবর পৌঁছে পুলিশের কাছে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বেধড়ক লাঠিচার্জ শুরু করে আমাদের উপর। কোন কিছু জিজ্ঞাসাবাদ না করে। আর সেখান থেকে গরুর গাড়ি টিকে চলে যেতে সাহায্য করে।
আর এই ঘটনা থেকে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠছে এত রাতে গরুগুলো দড়ি দিয়ে বেঁধে প্লাস্টিক চাপা দিয়ে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল? গরুগুলোকে কি চুরি করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল? নাকি পাচারের উদ্দেশ্যে রাতের অন্ধকারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল?
সেই কারণে কি দ্রুত গতিতে ছুটছিল পিকআপ ভ্যানটি?
মুখ্যমন্ত্রী সদ্য প্রশাসনিক বৈঠক থেকে যে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে তাহলে কি এদিনের গরু বোঝাই পিকআপ ভ্যান থেকে এই প্রশ্নই উঠছে।
পিকআপ ভ্যান চালক,গাড়িতে থাকা গরু গুলির কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। সে জানায় গরুগুলি জলপাইগুড়ির দিক থেকে নিয়ে এসেছে বলেছে এবং ফালাকাটা নিয়ে যাচ্ছে বলে স্বীকারোক্তি দেয়।
প্রায় ঘন্টাখানেক গরু বোঝাই পিকাপ টই চৌপতিতে আটকানো ছিল।
শ্যাম প্রসাদ বিজেপি জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক বলেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত জিতেছে তাই ভারতের নাগরিকরা আনন্দ উৎসবে মেতেছিল। ধূপগুড়িতে কিছু ক্লাবের যুবক জাতীয় পতাকা নিয়ে বিজয় উল্লাস করছিল, সেই সময় একটি গরু বোঝায় পাচারবকারির গাড়ি দ্রুত গতিতে। দ্রুত গতিতে গাড়িটি আসছিল বলে সেখানকার যুবকরা জিজ্ঞাসা করে। বৈধ কাগজপত্র দেখতে চান।আর সেটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় সেখানকার যুবকদের জন্য। কারণ এই গরু পাচারের সঙ্গে পুলিশ সরাসরি যুক্ত। পুলিশ উপস্থিত হয়ে অবৈধ যে গরু পাচার হচ্ছে তাদেরকে কিছু না বলে। তাদেরকে কি করে বের করে দেওয়া যায় দায়িত্ব নিয়ে সেখান থেকে গাড়িটিকে বের করে দিয়েছে। এখানে উৎসাহী ক্লাব সদস্যদের লাঠিপেটা করেছেন। এর থেকে পরিষ্কার গরু পাচার চক্রে সরাসরি তার এবং প্রশাসনের কর্তারা একাংশ জড়িত।