মোহাম্মদ শাহজাহান আনসারী,বাঁকুড়া: বাঁকুড়া জেলার ছাতনা ব্লকের অন্তর্গত ঘোড়ামুলী গ্রাম।সেই গ্রামে মা,বাবা,দিদি,অন্তঃসত্তা স্ত্রী কে নিয়ে বসবাস বিধান বাউরির। একটা সময় বিধান বাবুর মা সনকা দেবী লোকের বাড়িতে কাজ করে ছেলেকে মানুষ করেছে বলে দাবি করেন। অবশেষে ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন আয়োজিত এসএসসি গ্রুপ ‘সি’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০১৮ সালে ছাতনা ব্লকেরই একটি হাইস্কুলে যোগদান করেন বিধান বাবু। বাস! একটা সরকারি চাকরি, মানে গোটা জীবন নিশ্চিত! আর ফিরেও তাকাতে হবে না। এটাই বলতে বা দেখতে অভ্যস্ত সমাজের সকল স্তরের মানুষজন। নিশ্চিন্ত হয়ে এই বিধান বাবু ব্যাংকের থেকে লোন নিয়ে গড়ে তোলেন মাথার উপর শক্ত ছাদ। কিন্তু ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাসে আদালতে আদালতের নির্দেশিকা জারি হওয়ার পর মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে এই পরিবারের।প্রসঙ্গত ২০২২ সালে বিধান বাউরির ক্যান্সারের মতো মারন রোগ ধরা পড়ে, চাকরি করার পাশাপাশি দিল্লির এইমস্ এ চলে তার চিকিৎসা। আদালতের নির্দেশিকা অনুযায়ী চাকরি চলে যাওয়া এ যেন ‘মড়ার উপর খাড়ার ঘা’। কি করবে, কি হবে,কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে পরিবারটা, কিভাবে মিলবে ক্যান্সারের চিকিৎসার টাকা এসব ভেবে বিধানবাবু সহ পরিবারের সকলেই দু-চোখের পাতা এক করতে পারছেন না।
নুন আনতে পান্তা ফুরোনো সংসারে কি লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে চাকরি পাওয়া সম্ভব?যদি সম্ভবও হয়,প্যানেলে থাকা ‘বেনোজলদের’ জন্য উপযুক্ত তদন্ত হোক এটাই দাবি সমাজের সকল স্তরের মানুষজনের।
দুর্নীতি যেন পশ্চিম বাংলাকে কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য সকল স্তরেই মতন দানা বেঁধেছে এই দুর্নীতি। কে দায়ী এতগুলো ছেলের চাকরি চলে যাওয়ার জন্য?কে নেবে এই মানুষগুলোর সংসারের দায়ভার বারে বারে এই প্রশ্ন চিহ্নটা থেকেই যাচ্ছে।