অভিজিৎ হাজরা , হাওড়া :- ঘটনা বল্লভবাটি মহেন্দ্র লাল নগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে। এলাকার কেউ একজন বৃষ্টি ভেজা রাতে একটি বাঘরোল কে যেতে দেখে রেললাইন ধরে সেটা ভিডিও করে ফেসবুকে পোস্ট করে। পরে কেউ সেই ভিডিও সাথে যুক্ত করে দেয় বাঘের ডাক। সেই বাঘের ডাক যুক্ত ভিডিও আবার পোষ্ট করে বিভিন্ন সোসাল মিডিয়া তে আর তা থেকে ছড়িয়ে পড়ে এলাকা জুড়ে বাঘের আতঙ্ক। দোকানে, বাজারে, ট্রেনের কামরায় চলছে বাঘ নিয়ে নানা গাঁজা খুড়ি গল্প। যা আসলে আমাদের রাজ্য প্রানী বাঘরোল বা মেছো বিড়াল। কিছু ছোট সোসাল মিডিয়া বেস ইউটিউব চ্যানেল সেটা ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করেন।
তার পরেই নড়েচড়ে বসে পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা ‘ ফিউচার ফর নেচার ফাউন্ডেশন ‘ কর্তৃপক্ষ।
সংগঠনের এক নিষ্ট কর্মী শুভ্রদীপ ঘোষ কথা বলেন এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান সহ ঐ এলাকার পঞ্চায়েত প্রতিনিধির সাথে। অনুরোধ করা হয় একটি সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পোগ্ৰাম করার জন্য এলাকার মানুষ কে নিয়ে। এগিয়ে আসেন নবনির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রধান সেখ বদরে আলম ও পঞ্চায়েত সদস্য রাখহরি ঘোষ। অনুষ্ঠিত হল সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সুন্দর একটি পোগ্ৰাম। উপস্থিত ছিলেন জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি রঞ্জন কুন্ডু, এলাকার পঞ্চায়েত সমিতি সদস্য অর্পিতা সিট নন্দা মানোষ মন্ডল সহ একগুচ্ছ স্থানীয় বিশিষ্ট মানুষ।
মানুষ কে বোঝাতে বাঘরোল নিয়ে দেখানো হয় তথ্য চিত্র। বাঘরোল নিয়ে গবেষণা করা ইতিহাস গবেষক সায়ন দে আরো নানা তথ্য তুলে ধরেন প্রজেক্টরে। বাচ্ছাদের বোঝাতে প্রকাশ করা হয় কাটুন সম্বলিত ফোল্ডার। বক্তব্য, তথ্যচিত্র, কাটুন লিফলেট সব ধরনের প্রচেষ্টা করে সফল হওয়া গেলো। এলাকায় বাসিন্দাদের মধ্যে ভয়ের আবহ কাটিয়ে গড়ে তোলা গেলো সংরক্ষণের মনোভাব। এলাকার মানুষরা জানালেন বাঘরোল এখানেই থাকবে আমরা ওদের দেখভাল করবো, লক্ষ রাখবো যাতে ওদের কেউ আক্রমণ না করে।
ডোমজুড়, পাঁচলা, শ্যামপুর, সাঁকরাইল এবার জগৎবল্লভপুর বিভিন্ন এলাকায় যখনি বাঘের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে সেখানেই পৌঁছে গিয়েছে শুভ্রদীপ। প্রশাসন পঞ্চায়েত এলাকার মানুষ কে নিয়ে গড়ে তুলেছে রাজ্য প্রানী বাঘরোল নিয়ে সচেতনতার প্রাচীর। সব জায়গায় সফল ভাবে মুকাবিলা করেছে বাঘের গুজবের। প্রতিষ্ঠিত করেছে ওটা বাঘ নয় বাঘরোল।
এখন হাওড়া জেলার প্রায় মিথ হয়ে গিয়েছে যেখানে বাঘের ভয় সেখানে শুভ্রদীপ।